অন্দরসাজ মানেই ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অথবা বইপত্র ঘেঁটে নতুন ডিজাইনের হদিস খুঁজে বের করা। বৈঠকখানা, লিভিং রুম, ড্রইংরুম কিংবা বসার ঘর যে নামই ব্যবহার করি না কেন, জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য আদর্শ এই ঘর। বসার ঘরের অন্দরসাজ কেমন হবে তা নির্ভর করবে আমাদের ফ্ল্যাটের আয়তন, লাইফস্টাইল এবং বাজেটের ওপর।
মনে রাখবেন, বসার ঘরের অন্দরসাজ আমাদের রুচির প্রথম বহিঃপ্রকাশ। যেহেতু বসার ঘর বাড়ির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই সফিস্টিকেশনের সঙ্গে সঙ্গে কমফোর্টের বিষয়টা অত্যন্ত জরুরি।
আপনি যদি নতুন বাড়ি বানান কিংবা কেনেন, তাহলে চেষ্টা করুন যাতে আপনার বাড়ির ড্রইং, ডাইনিং রুম দক্ষিণ কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে হয়। এতে শীতের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে রোদ আসার ফলে ঘর গরম থাকবে এবং গরমের সময় বিকেল থেকে সন্ধ্যার দিকে ঘরে ঢুকবে দক্ষিণের খোলা হাওয়া, যা খুবই আরামদায়ক।
বড় ঘর হলে ফর্মাল সোফা, সেন্টার টেবিল, কর্নার, ল্যাম্প, ঝাড়বাতি, কার্পেট দিয়ে ঘরকে সাজাতে পারেন। চাইলে দুই ধরনের বসার আয়োজনও করতে পারেন। আর ঘর যদি ছোট হয় সে ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের আয়তন অনুযায়ী সাজানোর প্যাটার্ন এবং আসবাবপত্র নির্বাচন করা প্রয়োজন।
বসার ঘরকে বড় দেখানোর জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ড্রইং-ডাইনিংয়ের ব্যবস্থা একসঙ্গে করা হয়। ডাইনিং ও ড্রইং স্পেস আলাদা করার জন্য দুটি জায়গার মাঝখানে নানা রকমের পার্টিশন, বুক শেলফ বা ক্যাবিনেট দিতে পারেন।
রঙের সঠিক ব্যবহার বাড়িয়ে দিতে পারে ঘরের সৌন্দর্য। মনে রাখবেন উজ্জ্বল ও হালকা রং ঘর বড় দেখাতে সাহায্য করে। যদি ঘরে সূর্যের আলো কম ঢোকে তাহলে কোনোভাবেই দেয়ালে গাঢ় রং করাবেন না। ঘর আরো অন্ধকার দেখাবে। যদি গাঢ় রং করাতে চান তাহলে একটি দেয়ালে কমলা, লাল, হালকা নীল রং করে অন্য দেয়ালগুলোয় নিউট্রাল রং করান।
কনট্রাস্ট রঙের ব্যবহারে ঘরের স্যাঁতসেঁতে এবং মনমরা ভাব দূর হবে। কালারফুল এবং ব্রাইট মুড আনার জন্য কনট্রাস্ট রঙের কুশন কভার অথবা পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। পর্দার ডিজাইন অনেকটাই নির্ভর করে জানালা-দরজার ডিজাইনের ওপর। ছোট ফ্ল্যাটে বেশি ভারী পর্দা ব্যবহার না করাই ভালো। রিচ ফেব্রিকের পর্দা লাগালে ঘরে একটি আলাদা আমেজ আসে।
এখন মেঝে নিয়েও নানা রকমের এক্সপেরিমেন্ট করা যায়। সেহেতু দেয়ালের রং, ফার্নিচার, পর্দা, সোফা কভারের মতো মেঝে বারবার বদলানো সম্ভব নয়। তাই আপনার পছন্দ অনুযায়ী মেঝে বেছে নিন। যদি ফার্নিচার হাইলাইট করতে চান, তাহলে নিউট্রাল মেঝে রাখাই ভালো।
আর মেঝেতে কার্পেট পাতলে ঘর অনেক বেশি এলিগেন্ট লাগে। বাজেট কম থাকলে শতরঞ্জি ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের কর্নারগুলোতে রাখতে পারেন ইনডোর প্লান্টস বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেড ও ফুলদানি।
ঘরের ইন্টেরিয়র প্ল্যান করার আগে লাইটিংয়ের ব্যবস্থার ওপর বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। আলো-ছায়ার ম্যাজিক তৈরি করতে চাইলে সাদা, লাল, কমলা, গোলাপি বিভিন্ন ধরনের লাইট ব্যবহার করুন। আর বিশেষ অংশ হাইলাইট করার জন্য স্পট লাইট লাগান।
No comments :
Post a Comment